রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি হোটেল থেকে অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ। তাকে সন্দেহভাজন ইসরাইলি গুপ্তচর হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক রাজারুদ্দিন হোসেন।
দেশটির প্রভাবশালী অনলাইন মালয় মেইল জানিয়েছে, গত বুধবার (২৭ মার্চ) জালান আমপাংয়ের একটি হোটেল থেকে ছয়টি হ্যান্ডগান ও ২০০ গুলিসহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ১২ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এই সময় তিনি জাল একটি ফরাসি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি একটি ইসরাইলি পাসপোর্ট হস্তান্তর করেন। যদিও সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছে, সে পারিবারিক বিরোধের কারণে অন্য এক ইসরাইলি নাগরিককে খুঁজতে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন। তবে পুলিশ তার এই মন্তব্য পুরোপুরি বিশ্বাস করতে নারাজ।
এছাড়া মালয় মেইল আরো জানিয়েছে, আটক ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন বেশ কয়েকটি হোটেল পরিবর্তন করেন। সন্দেহভাজন ব্যক্তি কীভাবে অস্ত্রগুলো পেয়েছে? সে বিষয়ে তদন্ত করছে বলেও পুলিশ বিবৃতিতে উল্লেখ করে। তবে আটককৃত অস্ত্র ক্রিপ্টোকারেন্সী দিয়ে কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ হেডকোয়াটার্স।
সিঙ্গাপুরে ইসরাইলি দূতাবাসকে এই বিষয়ে ইমেইল করলেও সেই মেইলের কোনো সাড়া দেয়নি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা অনুসারে, মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে সন্দেহভাজন ওই ইসরাইলিকে অস্ত্র সরবরাহ ও গাড়িচালক হিসেবে কাজ করার সন্দেহে শুক্রবার এক বিবাহিত দম্পতিসহ তিন মালয়েশিয়কে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজারুদিন।
এ সময় ওই দম্পতির গাড়ি থেকে একটি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া, আটককৃত ওই ইসরাইলি গ্রেপ্তারের পর মালয়েশিয়ার রাজা, প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা জোরদার এবং দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে দেশটি।
উল্লেখ্য যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়া ফিলিস্তিনিদের কট্টর সমর্থক এবং গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছে।
২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীকে গুলি করে হত্যা করে দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি। এরপর হামাস দাবি করে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে হত্যা করেছে। তবে ইসরাইল এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।