গাজায় ইসরাইলের অবিরাম হামলা। একের পর এক পড়ছে লাশ। শিশুদের চোখে-মুখে হতাশা। পেটে খাবার নেই। অসুস্থতায় ওষুধ নেই। জ্বালানি তেল নেই। হাসপাতালে বোমা হামলা। সাধারণ বসতি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। অবাক বিস্ময়ে নতুন এমন এক পৃথিবী দেখছে গাজার কোমলমতি শিশুরা। ইসরাইলের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
গাজা উপত্যকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে ফ্রান্স, মিশর ও জর্ডান। কায়রোতে বৈঠকের পর তারা এই দাবি জানান। অন্যদিকে ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিজয়ের অঙ্গীকার করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয় মিশর, ফ্রান্স এবং জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজায় ‘অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ এবং হামাসের হাতে আটক সকল বন্দিকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে তিন কূটনীতিকের বৈঠকের পর এই আবেদন জানানো হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজোর্নও। তিনি বলেন, তার সরকার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধের ‘রাজনৈতিক’ নিষ্পত্তির জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করবে। তিনি আরও বলেন, সেই প্রস্তাবে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধানের সমস্ত মানদণ্ড অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মূলত ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে দীর্ঘকাল ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুইটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে সমর্থন করলেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরাইলি সরকার এর বিরোধিতা করছে। ওদিকে ইরান সমর্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিজয়ের অঙ্গীকার করেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসলামিক জিহাদের নেতা তেহরানে আলোচনার জন্য ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। জিয়াদ আল-নাখালাহ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছেন, তার দল গাজায় ‘যুদ্ধে বিজয়ী’ হবে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের জন্য ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ানকে তিনি ধন্যবাদও জানিয়েছেন বলে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে। আল-নাখালাহকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সক্রিয় কূটনীতি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের অবস্থানকে দৃঢ় করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে।’ অন্যদিকে ইসরাইলের হামলায় ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্টের ২৬ সদস্য নিহত হয়েছেন। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) বলেছে, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি বাহিনী তার দলের ২৬ সদস্যকে হত্যা করেছে। গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, ‘তাদের মানবিক দায়িত্ব পালন করার সময় এবং রেড ক্রিসেন্টের নিরাপদ প্রতীক পরিধান করে থাকার সময়ও’ তাদের প্রায় ১৫ জন কর্মী নিহত হয়েছেন।