সর্বশেষ
Home » অন্যান্য » অন্যান্য বিশেষ সংবাদ » সিলেটে দিনে অর্ধেক লোডশেডিং, ব্যবসায়ীরা চিন্তায়

সিলেটে দিনে অর্ধেক লোডশেডিং, ব্যবসায়ীরা চিন্তায়

দিন-রাত মিলে ২৪ ঘণ্টা। এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে সিলেটে। গ্রামের পরিস্থিতি আরও কঠিন। ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। সেহরি ও ইফতার অন্ধকারেই করতে হচ্ছে বেশির ভাগ গ্রামের মানুষদের। নগরের পরিস্থিতিও একই। সেহরি ও ইফতারে বেশির ভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুতের এই আসা-যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। রমজানের শেষ দশক তাদের ব্যবসার মৌসুম। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে বিকিকিনি নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা জেনারেটর জ্বালিয়ে ব্যবসা করে লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য মতে; সিলেট জোনে গড়ে প্রতিদিন ২৭০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। সিলেট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০ থেকে ১৭০ মেগাওয়াট। সেখানেও অর্ধেক সরবরাহ করা হয়। এ কারণে অর্ধেক সময় লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে; ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সিলেটে লোডশেডিং হচ্ছে; এটা ঠিক নয়। বরং সিলেটে প্রতি রাতেই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। কালবৈশাখির ছোবলে কিছু সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। কোনো সমস্যা হলে সেটি সারিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়। প্রতিরাতেই বজ্রসহ ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। আর এতে করে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের মানবজমিনকে জানিয়েছেন- শনিবার সিলেটে ৪৫ ভাগ লোডশেডিং ছিল। দু’দিন আগে সেটি ছিল ৫৩ ভাগে।
কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি। বলেন- নগরের চেয়ে গ্রামে লোডশেডিং কিছুটা বেশি হচ্ছে। সেটি সমন্বয় করার চেষ্টা হচ্ছে। এদিকে- ক্রমাগত লোডশেডিংয়ের কারণে সিলেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিকিকিনি শঙ্কা আরও প্রবল হচ্ছে। বাজার জমে জমে করেও জমছে না। বিপণি বিতানে নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকায় কিছুটা স্বস্তি আছে। কিন্তু ৭০ ভাগ মার্কেটে জেনারেটর নেই। নিজেরা জেনারেটরের ব্যবস্থা করে ব্যবসায়ীরা দোকানে আলো রাখছেন। নগরের হাসান মার্কেট, মধুবন, শুকরিয়া, আহমদ ম্যানশন, লন্ডন ম্যানশন সহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিং হলে মার্কেটের ভেতরের তাপমাত্রা বাড়ে। ক্রেতারা বেরিয়ে যায়। দ্রুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে সিলেটে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বেন। ঈদ বাজারে যে লাভ হবে সেটি তেল খরচেই ব্যয় হয়ে যাবে বলে জানান তারা। সিলেট ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রহমান রিপন গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- মধ্য রমজান পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল না। যখন বাজারে ক্রেতা আসতে শুরু করেছে তখন থেকেই শুরু হয়েছে লোডশেডিং। এতে ব্যবসায় অনেক ব্যাঘাত ঘটছে। তিনি বলেন- লোডশেডিংয়ের বিষয়টি নিয়ে আমরা সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের দ্বারস্থ হয়েছি। তার সহযোগিতা চেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে নীতি নির্ধারক মহলেও আলোচনা চলছে। এখনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সিলেটে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেটে পিডিবি’র চেয়ে পল্লী বিদ্যুতের পরিস্থিতি আরও খারাপ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গ্রামাঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে ক্ষোভ আছে। তার উপর লোডশেডিংয়ের কারণে বেশির ভাগ গ্রাম এলাকা অন্ধকারে থাকছে। বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকেও সহসাই কোনো সুখবর মিলছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *