ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই পরিবার পরিজনদের সাথে মিলিত হওয়া। বছরের এই একটি উৎসবকে ঘিরে মুসলমানদের ঘরে নেমে আসে অনাবিল আনন্দ। সেই আনন্দে যোগ দিতে সীমাহীন কষ্ট উপেক্ষা করে উত্তরের লাখ লাখ মানুষ ঢাকা থেকে বাড়ির পথে এখন। তাদের এই ঈদযাত্রা খুব বেশি আরামদায়ক নয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে যেভাবে ভাবে পরছেন বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করছেন। ঢাকা রংপুর মহাসড়কে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের চিত্র চোখে পড়ছে। তাদের বেশির ভাগ মানুষ এবার ট্রাক, মুরগিবাহী পিকাপে চরেও আসছেন। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য তাদের এই যাত্রা।
রংপুরের মিঠাপুকুর এলাকার সৈকত ইসলাম, গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। বছরে এক বারই বাড়িতে আসার সুযোগ পান তিনি।
বেতন বোনাস কম পাওয়ায় ঈদের বাজার তেমন করতে পারেননি। তারপর বাসের ভাড়া বৃদ্ধি, সহজে টিকিট মেলেনা। উপায় না পেয়ে কম টাকায় ট্রাক ভাড়া করে বাড়িতে ফিরছেন। বগুড়ার মোকামতলা এলাকা পার হওয়ার সময় তার সাথে কথা হলে এসব জানান। তিনি তার স্ত্রী সন্তানদেরও ট্রাকে চেপে বাড়ি নিচ্ছেন।
জয়পুরহাটের পারভিন আক্তার। ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। বাসের টিকিট সংকট থাকায় স্বামীর বাইকে চড়ে ভোরে রওনা দিয়েছেন ঢাকা থেকে। বেলা ১২টার দিকে তারা বগুড়া পাড়ি দেন। ঈদে পরিবারের সাথে মিলিত হওয়ার জন্যই তাদের এই কষ্টের যাত্রা।
অন্য বারের চেয়ে এবার উত্তরের মহাসড়ক মোটামুটি স্বাভাবিক। ফোর লেনের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। এর সুফল এবার ঈদে বাড়ি ফেরৎ যাত্রীরা পাচ্ছেন। তবে যানবাহন সংকট কিছুটা পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপর অনেকেই ঈদের বেতন বোনাস ঠিক মত পাননি। বাড়তি দামে বাসের টিকি কেনার সামর্থ্য অনেকের নেই। ফলে যে যেভাবে পারছেন বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।
এদিকে রাস্তার নিরাপত্তা নির্বিঘœ করতে হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। তবে ট্রাক ট্রলিতে করে যাত্রী বহন করলেও সেদিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না প্রশাসন।
তবে যেভাবে ঝুঁকিপ্রবণ গাড়িতে মানুষ বাড়ি ফিরছেন তাতে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সুধিমহল।