সর্বশেষ
Home » সর্বশেষ » ৩২ নাম্বারের কাছে হেনস্তার শিকার সেই ব্যক্তি জীবিত, যা বললেন তিনি নিজেই

৩২ নাম্বারের কাছে হেনস্তার শিকার সেই ব্যক্তি জীবিত, যা বললেন তিনি নিজেই

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভে ১৫ আগস্ট উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিবস্ত্র করে হেনস্তার শিকার ব্যক্তি শেরপুরের বাসিন্দা এবং ওই ব্যক্তি জীবিত আছেন।

হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যুর খবর নেট দুনিয়ায় ছড়ানো স্রেফ গুজব।

জানা গেছে, হেনস্তার শিকার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবদুল কুদ্দুস মাখন। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা এলাকায় তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের খাকডহর এলাকায় তার পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে।

১৫ আগস্টে সকালে অন্য অনেকের মত শেরপুরের আব্দুল কুদ্দুস মাখনও ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে। তাকে লাঠিধারী যুবকেরা আটক করে প্রথমে বিবস্ত্র করে; পরে একটি রিকশায় উঠিয়ে তাকে নাচতে বাধ্য করা হয়।

এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আব্দুল কুদ্দুস মাখনকে লাঠিধারী যুবকেরা শরীরের নানা স্থানে খোঁচা দিচ্ছেন এবং উল্লাস করছেন। বিষয়টি নিয়ে দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হয়।

এর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগও আনেন কেউ কেউ।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আব্দুল কুদ্দুস মাখন বলেন, “আমি প্রতিবছরই জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তার বাসভবনে যাই। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে আমি আমার মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে বের হয়ে অটোরিকশায় ধানমন্ডি ৩২ এর কাছাকাছি পৌঁছাই। তখন চুল-দাড়ি পাকা বয়স্ক একজন লোক আমার অটোরিকশার গতিরোধ করে। ‘আওয়ামী লীগের লোক পাইছি’ বলে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। তখন আরও কিছু যুবক লাঠি হাতে সেখানে দৌড়ে আসে। একপর্যায়ে তারা আমার ওপর হামলা করে। অনেক মারধর করে এবং আমাকে বিবস্ত্র করে ফেলে। আমাকে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে মারধর আর হেনস্তা করা হয়। আমি একজন রিকশাচালকের কাছ থেকে একটি গামছা পরে বাসার দিকে রওনা হই। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমি বাসায় ফিরে আসি। ”

তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক। বর্তমানে আমার কোনো পদবি নেই। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ২০০৭ সালে বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ নামে একটি সংগঠন করেছিলাম। আমরা এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে স্মৃতিচারণ করতাম। আমি ওই সংগঠনের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলাম, পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নব্বইয়ের দশকে ময়মনসিংহ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে বুকে লালন করি। ভালবাসার টানেই বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর ধানমন্ডির ভবনে উদ্দেশে গিয়েছিলাম। হাজার হাজার লোকের মধ্যে ফুল দিলে আমাকে কে দেখতো। ’

আব্দুল কুদ্দুস মাখন বলেন, ‘আমাকে যারা গতকাল হেনস্তা ও লাঞ্ছিত করেছে আল্লাহ সবার সঠিক বিচার করবেন। এ ঘটনায় আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার ত্যাগ ও ভালবাসা প্রকাশ পেয়েছে,এছাড়া ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,স্থানীয় ভাবে মতিয়া চৌধুরীর জন্য আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে পারি নাই, দীর্ঘ দিন যাবৎ নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি মতিয়া চৌধুরী দ্বারা , মিথ্যা মামলার স্বীকার হয়ে জেল খেটেছি,গতকাল জাতীর জনককে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হেনস্তার স্বীকার হয়ে জীবনের বড় পাওনা পেয়েছি,দেশে যদি আইন কানুন থাকে তাহলে অবশ্যই বিচার পাব। দেশবাসীর উদ্দেশে বলি, আমি জীবিত আছি, ভালো আছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। ’

১৫ আগস্ট উপলক্ষে ধানমন্ডি-৩২ ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে কোনো সমন্বয়ক বা সহসমন্বয়ক জড়িত থাকলে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *