চাকরি জাতীয়করণ ও পুনর্বহাল, পরীক্ষা বাতিল, শেখ হাসিনার সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার ও বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন।
এতে পল্টন, প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন, মিন্টু রোড, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, সায়েন্সল্যাব, উত্তরাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট ছিল দিনভর।
রোববার (১৮ আগস্ট) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কর্মজীবীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও চাকরিচ্যুতরা।
বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রেস ক্লাবের উল্টো দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তৎকালীন বিডিআর থেকে চাকরিচ্যুত ৭৬তম ব্যাচের সদস্যরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরি জাতীয়করণে দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।
এ ছাড়া ম্যাটস, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা স্বেচ্ছাসেবী (মহিলা), বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতি ও তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন নিজ নিজ দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। এতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাময়িক যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যার দীর্ঘ প্রভাব চলে বিকেল পর্যন্ত। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় দিনভরই তীব্র যানজট দেখা যায়।
এ ছাড়া শিক্ষা ভবনের দিকে বিভিন্ন সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেন ডিপ্লোমা সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকালে বাংলামোটরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের সামনেও একটি সংগঠনকে বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান নিতে দেখা যায়। বাদ যায়নি কারওয়ান বাজারও। সেখানেও কিছু লোককে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এদিকে বিকালে এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনেও এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ প্রত্যাশী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। আরেকটি সংগঠনকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে।
হঠাৎ রাজধানীজুড়ে এতগুলো সংগঠনের মিছিল ও অবস্থানের কারণে বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছু কিছু এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। আধা ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে গন্তব্যে যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায় যাত্রীদের। অনেককেই যানজটের কারণে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
মোমিন উদ্দিন মিলন নামের একজন সরকারী কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা সেনানিবাস হতে দুই ঘণ্টা আগে রওনা করি। মন্ত্রণালয়ে কাছাকাছি এসে গ্রাম পুলিশের চাকুরী স্থায়ী করণের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচির কারণে মন্ত্রণালয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি বিধায় সেনানিবাসে ফেরত যাচ্ছি।