বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় ব্যাপক প্রাণহানি এবং হতাহতের ঘটনায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দেখামাত্র গুলির নির্দেশে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ব্যাপক প্রাণহানি এবং হতাহতের ঘটনা প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক।
ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “জটিল এই মুহূর্তে বাংলাদেশ যখন স্থিতিশীলতার দিকে এগুচ্ছে সেই মুহূর্তে বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়ে মহাসচিব যে চিঠি লিখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির তথ্য মতে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনার দেখামাত্র গুলির নির্দেশে ৮১৯ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ২৫ হাজার আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ গুলিবিদ্ধ। এই হত্যাকান্ড এবং হতাহতের সঙ্গে যারা জড়িত জাতিসংঘ মহাসচিব কী তাদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন?”
জবাবে ডোজারিক বলেন, “মুশফিক, এই বিশেষ সংকটের শুরু থেকেই আমরা দায়বদ্ধতার কথা বলছি।”
“সহিংসতা, প্রাণহানি, রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সবগুলো বিষয়কে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা প্রয়োজন,” বলে মন্তব্য করেন মুখপাত্র ডোজারিক।
ব্রিফিংয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে মুখপাত্র ডোজারিক বলেন, “বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন মহাসচিব গুতেরেস। চিঠিতে বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন মহাসচিব।”
তিনি বলেন, “জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, তিনি আশাবাদী যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবে যার মাধ্যমে যুবক ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাক স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হবে।”
দেশের সকল নাগরিক, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
ডোজারিক বলেন, “মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস।”