সর্বশেষ
Home » শিক্ষা » প্রধান শিক্ষকের নবম ও সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবি

প্রধান শিক্ষকের নবম ও সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবি

সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে দ্রুত পদোন্নতি বাস্তবায়ন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে এন্ট্রিপদ থেকে পরিচালক পর্যন্ত শতভাগ পদোন্নতির দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেড ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার দাবি জানায়।

এছাড়া শিক্ষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে সহকারী শিক্ষকদের দশম ও প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষা ও আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়। এতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মোট ১১টি সংগঠনের নেতারা।

প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নেতারা বলেন, মানসম্মত শিক্ষা প্রদান ও আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে পেশাগত দক্ষতা সম্পন্ন বিপুল সংখ্যক শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষকতা পেশাটি এখনও এ দেশে তেমন জনপ্রিয় না। ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে এই পেশায় আসতে অনীহা প্রকাশ করে। শিক্ষকতার পেশাকে আর্কষণীয় করে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে এই পেশায় নিয়ে আসা, পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের পেশাগত মান উন্নয়ন প্রয়োজন।

তারা বলেন, শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিতে শিক্ষকদের পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজ গঠনের কারিগর হয়েও শিক্ষকরা আর্থিক কষ্টে ভুগছে। এটা নিরসন করতে হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ আকাশ বলেন, বেতন বৈষম্য রোধে দেশে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন। শিক্ষা একমুখী হলে বেতনও একমুখী হবে। একইসঙ্গে সকল প্রকার শিক্ষকদের আলাদা বেতন স্কেল করা হোক। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দেওয়া হোক। বিশ্বের নানা দেশে শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন স্কেল রয়েছে।

ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান বলেন, শিক্ষাগত, দারিদ্র ও আর্থিক অস্বচ্ছতা একটা জাতির নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে। সে হিসেবে শিক্ষা খাতকে বিশেষ নিরাপত্তা খাত হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ খাতের সকলের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বেতন ও পদোন্নতির বিষয়ে অবহেলার সুযোগ নেই।

এ সময় প্রাথমিক শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে স্বল্প সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো:

১. সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি মামলার রায়ের আলোকে প্রধান শিক্ষকদের ০৯-০৩-২০১৪ তারিখ থেকে ১০ম গ্রেড ও ২য় শ্রেণির পদোমর্যাদা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩. ২০০৯ সাল থেকে আটকে থাকা সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দ্রুত বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষক এন্ট্রিপদ ধরে পরিচালক পর্যন্ত যোগ্যতার ভিত্তিতে শতভাগ পদোন্নতি দিতে হবে।

৪. নিয়োগবিধি সংশোধন পূর্বক প্রধান শিক্ষক থেকে উপরের পদগুলোতে নিয়মিত পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। এবং বৈষম্যপূর্ণ নিয়োগবিধি ২০২৩ বাতিল করে সমন্বিত নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

৫. ৮ম পে স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করতে হবে। এবং সহকারী শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তি সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৬. শিক্ষা সম্পর্কিত বিভাগীয় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

৭. প্রতি তিন বছর পর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা দিতে হবে।

৮. নন-ভ্যাকেশনাল ঘোষণা করে সরকারের অন্য ডিপার্টমেন্টের ন্যায় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।

৯. চাকরির ২ বছর পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

১০. নাম মাত্র টিফিন ভাতা মাসিক ২০০টাকার স্থলে ন্যূনতম ৩০০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে।

১১. মাসিক সমন্বয় সভায় সহকারী শিক্ষক প্রতিনিধির উপস্থিত নিশ্চিত করতে হবে।

১২. সিনিয়র শিক্ষক কোন কোন ক্ষেত্রে জুনিয়র শিক্ষকদের থেকে বেতন কম পান। সে ক্ষেত্রে বেতন সমতা আইন পুনরায় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

১৩. সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এক শিফটে এনে বিদ্যালয় সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।

১৪. বার্ষিক ছুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছুটির সাথে সমন্বয় করে নির্ধারণ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *