সর্বশেষ
Home » অন্যান্য » ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেয়া মানে শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি: কাদের গণি চৌধুরী

ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেয়া মানে শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি: কাদের গণি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের মূল এখনো রয়ে গেছে। যদি এটিকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করতে না পারি তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন হবে না। কারণ ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেয়া মানে শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা। 
আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত ‘গণমাধ্যম ও ফ্যাসিবাদ উত্তর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, কারা ফ্যাসিবাদের দালাল তা আমরা জানি। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে প্রশংসা করতো, অথচ কোনো প্রশ্ন করতো না। তেল মেরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতো। মনে হতো প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন যেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রসঙ্গে বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, এই প্রেস ক্লাব ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত হতে হবে। যারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে সাংবাদিকতা করেছেন তাদের নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু যারা সকল নিয়মনীতি ভঙ্গ করে স্বৈরাচারের দালালি করেছেন তাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। প্রয়োজনে বিএফইউজে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ভুলে যাইনি। আন্দোলনে কীভাবে নিরীহ শিক্ষার্থীদের পাখির মতো হত্যা করেছে। যারা ফ্যাসিবাদের দালাল তাদের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। 

কাদের গণি আরও বলেন, আমাদের নিজেদের নিয়ে কথা বলতে হবে। আমরা সংবাদমাধ্যম হতে পেরেছি কিন্তু গণমাধ্যম হতে পারেনি। এখন বগলদাবা সাংবাদিক, সম্পাদকের অভাব নেই। তারা আমাদের সাংবাদিকদের মানমর্যাদা নষ্ট করছে। বিভিন্ন সুবিধার জন্য তারাই ফ্যাসিবাদীদের থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। একজন সৎ সাংবাদিক কখনো ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করে না, কখনো খামের জন্য অপেক্ষা করে না। আমরা (সাংবাদিকরা) কি সমাজের অতন্দ্র প্রহরী হতে পেরেছি? আমরা সাংবাদিক নয় চাটুকারিতাই করেছি। তাইতো ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে কাউকে কাউকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। আমাদের ভুলগুলো বলতে হবে। আজকে সময় এসেছে সৎ সাংবাদিকতা ফিরিয়ে আনার, ফ্যাসিবাদ যেখানে আসবে সেখানেই প্রতিবাদ করা। সাংবাদিকতাকে লাথি মেরে আমরা দলদাশ হয়ে গেছি। হলুদ সাংবাদিকতা, তথ্য সন্ত্রাস সঠিক সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে। 

‘সাগর-রুনি হত্যার বিচার যেসব বিশ্বাস ঘাতকতাদের কারণে এখনো হয়নি তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা ও প্রতিথযশা সাংবাদিক শফিক রেহমান নির্যাতনের শিকার নিয়ে তৎকালীন সময়ে কোনো মিডিয়া তেমন কোনো ভূমিকার রাখেনি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য জাহেদুল করিম কচি বলেন, মহান বিপ্লবের মধ্যদিয়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পেয়েছে। বিগত সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। যেসব সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি। এ সময় চট্টগ্রামের প্রশাসনে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা যারা রয়েছেন অবিলম্বে তাদের অপসারণও দাবি করেন। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত, একাত্তর টিভি’র ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী, দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সেলিম, দৈনিক দিনকালের ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল, সিনিয়র সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মাহবুব রশিদ, কামরুল হুদা, ওয়াহিদ জামান, এসএ টিভি’র ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান নুরুল আলম মিন্টু, বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, সাংবাদিক শাহ নেওয়াজ রিটন। যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মজুমদার নাজিম উদ্দীন।
সভা শেষে সদ্য প্রয়াত বিএফইউজে’র সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *