জাপানের এক স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে দোষী ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে চীন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১০ বছর বয়সী ওই শিশুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। বেইজিংয়ে অবস্থিত জাপানের দূতাবাস বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম ঝং চ্যাংচুন। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শেনজেনের বাসিন্দা তিনি। স্কুলে যাওয়ার পথে জাপানি ওই শিশুর ওপর হামলা করনে চ্যাংচুন। শিশুটিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনা দুই দেশেই বেশ আলোড়ন তৈরি করেছিল। কূটনৈতিক উত্তেজনায়াও জড়িয়ে পড়ে বেইজিং ও টোকিও। ঘটনাটিকে ‘বিদেশের মাটিতে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করে জাপান।
বিবিসিকে দেয়া এক বিবৃতিতে জাপানের দূতাবাস বলেছে, পুরোপুরি নিষ্পাপ একটি শিশুকে হত্যা অমার্জনীয় অপরাধ বলে মনে করে জাপান সরকার। আমরা এই বিচারকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে জাপান সরকার। চীনের মাটিতে জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে বেইজিং প্রশাসনের কাছে জোরালো অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানিয়েছে টোকিও। জাপান জানিয়েছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শিশুটিকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করায় চীনে অবস্থানরত জাপানি নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশে থাকা টয়োটা সহ জাপানের অন্যান্য কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে। নিজ কর্মীদের বাড়ি ফেরাতে বিনামূল্যে বিমানের টিকিটের প্রস্তাব দেয় প্যানাসনিকের মতো প্রতিষ্ঠান।
ঝং জাপানি ব্যক্তিদের টার্গেট করেছিলেন কিনা সে বিষয়টি মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়নি। এই ঘটনাটি চীনের সোশ্যাল মিডিয়াতে অনিয়ন্ত্রিত জাতীয়তাবাদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। অনলাইন বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, স্কুলছাত্রকে হত্যার বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল একটি তারিখে ঘটেছিল। যেটি হচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর। ১৯৩০ এর দিকে চীনের মাঞ্চুরিয়া দখলের জন্য অগ্রসর হয়েছিল জাপান। ঐতিহাসিকভাবে চীন ও জাপানের মধ্যে এ বিষয়ে একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here