সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক একটি নিবন্ধ নিয়ে ‘ধর্মের অপব্যাখ্যা’ দেওয়া আসিফ মাহতাবকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
এক বিবৃতি দিয়ে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এ দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে জাসদ নেতারা বলেছেন, সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া বিষয় নিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। তিনি বিজ্ঞানশিক্ষার বিরোধিতাকারী এবং ধর্মের অপব্যবহার করে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা ও অশান্তি সৃষ্টি করছেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, অতীত থেকে ধর্মের অপব্যাখ্যা, অপব্যবহারকারীরা বিজ্ঞানশিক্ষার বিরোধিতা করে মুসলমানদের বিজ্ঞান ও যুক্তির পথ থেকে সরিয়ে অন্ধ ও কূপমণ্ডুক বানানোর অপ্রয়াস চালিয়ে আসছেন। তাঁরা তাঁদের ধর্ম ব্যবসায়ের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে বিজ্ঞানশিক্ষা ও যুক্তিকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে আসছেন।
অপর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেছেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীবিষয়ক অধ্যায়ে থাকা ‘শরীফার গল্প’ যে দুটি পৃষ্ঠায় আছে, সেই পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলার আহ্বান জানান। তিনি নিজেও পৃষ্ঠা দুটি ছিঁড়ে ফেলেন।
মহিলা পরিষদ বলেছে, শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। একজন শিক্ষকের এ জনগোষ্ঠী সম্পর্কে নেতিবাচক, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও আচরণ অগ্রহণযোগ্য ও মানবাধিকারের পরিপন্থি।
এদিকে সোমবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আসিফ মাহতাব ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো চুক্তি নেই। এতে আরও বলা হয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখার পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তি এবং সহিষ্ণুতা বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।