প্রধান দুটি বিরোধী দল মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজুকে সতর্ক করেছে। মুইজুর প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, একটি চীনা জাহাজ তাদের বন্দরে নোঙর করবে। এ ঘোষণা দেয়ার দু’দিন পর ওই দুটি বিরোধী রাজনৈতিক দল বলেছে, সরকারের ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ সতর্কবার্তা দিয়েছে মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) এবং ডেমোক্রেটরা। এরই মধ্যে চীনের প্রতি তীব্রভাবে ঝুঁকে পড়েছে মালদ্বীপ। বিশেষ করে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে এর বড় রকম প্রভাব আছে। এর ফলে মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
২০২৩ সালে ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুইজু। এর মধ্য দিয়ে তিনি হটিয়ে দেন ভারতপন্থি শাসক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইব্রাহিম সোলিকে। মুইজু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার দেশে থাকা ভারতীয় সেনাদের দেশে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
সম্প্রতি একটি বালককে স্থানান্তর করে রাজধানী মালেতে নেয়ার জন্য তার দেশে থাকা ভারতীয় বিমানকে অনুমতি দিতে গড়িমসি করে। এতে ওই বালকটি প্রাণ হারায়। ভারতীয় সেনাদের দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ার পর ভারতের বিজেপি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর চাপানউতোর দেখা দেয়। এরই মধ্যে তিনি দু’জন প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন।
তার এই ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট এমডিপি এবং ডেমোক্রেটরা। তারা ভারতকে দীর্ঘদিনের আস্থায় নেয়া মিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে। বিবৃতিতে তারা বলে, যেকোনো উন্নয়ন অংশীদারের সঙ্গে, বিশেষ করে দীর্ঘদিনের আস্থায় নেয়া মিত্রের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতিতে তারা বিশ্বাস করে, দেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। তারা মালদ্বীপ সরকারকে সব উন্নয়ন অংশীদারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান, যা এতদিন চলমান ছিল। মালদ্বীপের ৮৭ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে এমডিপি এবং ডেমোক্রেটরা মিলে মোট ৫৫টি আসনের মালিক। তারা বলেছে, মালদ্বীপের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য ভারত মহাসাগরকে স্থিতিশীল এবং নিরাপদ রাখা প্রয়োজন।
যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। তাতে বক্তব্য রাখেন এমডিপির চেয়ারপারসন ফায়েজ ইসমাইল, পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার আহমেদ সালিম, ডেমোক্রেট প্রধান এমপি হাসান লতিফ এবং পার্লামেন্টারি গ্রুপ নেতা আলি আজিম। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লঙ্কাদ্বীপ সফর নিয়ে এক পোস্টে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় মালদ্বীপে। সেখানকার মন্ত্রীরা মোদির বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এ নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয়। ফলে চীনের সঙ্গে সম্প্রতি সম্পর্ক গাঢ় করে মালদ্বীপ। একই সঙ্গে ভারতীয় সেনাদেরকে মালদ্বীপ ছাড়ার জন্য ৫ই মার্চ পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়েছে।