সর্বশেষ
Home » বিশ্ব » বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী

বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী

মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে প্রাণে বাঁচাতে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৬ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। শনিবার বিভিন্ন সময়ে তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। কয়েকদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও রোহিঙ্গা সলিডারি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। দুইপক্ষের ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনায় গুলি, মর্টারশেল, বিস্ফোরিত রকেট লাঞ্চারের খোল বাংলাদেশে এসে পড়ছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রবীর ধর নামে এক বৃদ্ধ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তার স্বার্থে ৫টি স্কুল বন্ধ রেখেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, মিয়ানমারের যেসব সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানায় এখন পর্যন্ত ৫৮ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষাকারী সদস্য বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছেন। রোববার ভোরে প্রথমে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্য আশ্রয় নেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পে। দুপুরের দিকে আরও ৫ সদস্য আশ্রয় নিতে প্রবেশ করেন বাংলাদেশে।

এরপর বিচ্ছিন্নভাবে দেশটির সীমান্তরক্ষীর আরও কয়েকজন সদস্য প্রবেশ করে বলে জানা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫৮ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীর সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
তারা সবাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে সীমান্তবর্তী ক্যাম্প দখলকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে উভয়ের মধ্যে থেকে থেমে গোলাগুলি হচ্ছে। রোববার ভোর থেকে আবার গোলাগুলি, মর্টার শেল নিক্ষেপ ও রকেট লান্সার বিস্ফোরণে, বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা। শুধু তাই নয় গুলির সিসা ও রকেট লঞ্চার উড়ে এসে পড়ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। তাদের ছোড়া গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্ত এলাকার কোনার পাড়ায় বসত বাড়িতে এসব এসে পড়ছে। আতঙ্ক, উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন না অভিভাবকরা। সীমান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অঘোষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা স্কুল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বলেন, সীমান্তে গুলাগুলি এবং অস্থিরতা অব্যাহত থাকায় ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অঘোষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি এরকম থমথমে থাকলে কালকেও বন্ধ থাকতে পারে।

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, সীমান্ত আজকেও গুলাগুলি চলছে। এ কারণে মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসায় কোন শিক্ষার্থী না আসায় সেটি বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য স্কুলগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে শিক্ষার্থী খুবই কম। সীমান্তে ৩ টি স্কুল রয়েছে সেখানে রাস্তা বন্ধ থাকায় তুমব্রু থেকে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেনি।
এছাড়াও কৃষকরা কৃষি ক্ষেতে যেতে ও দৈনন্দিন কাজে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *