দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে দুই শিশু, একজন নারীসহ বেশ কিছু মানুষ নিহত হয়েছেন। বুধবার দেশটিতে বেশ কিছু গ্রামের উপর বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। এতে কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে বলা হয়, ইসরাইলের সাফেদ শহরের কাছে তাদের সামরিক স্থাপনায় রকেট হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এরপরই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ধারাবাহিক হামলা চালাতে থাকে ইসরাইল। ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ও উগ্র ডানপন্থি ইতামার বেন-গাভির বলেছেন, আমরা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু করবো। না হয় ইসরাইলি জনগণ মনে করবে দেশে কোনো সরকার নেই।
তবে সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন ইসরাইল বেতেনুর নেতা আভিগডর লিবারম্যান। তিনি বলেন, রেডলাইনকে সাদা পতাকায় পরিণত করা হয়েছে। ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদ হিজবুল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তারা উত্তরে পরাজিত হয়েছে। সাফেদ শহরের মেয়র বলেছেন, শহরের চারপাশে সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পড়েছে হিজবুল্লাহর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। তা এ শহরের ভেতরে পড়েনি।
সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আকাশে ধ্বংস করে দিতে ব্যর্থ হয় ইসরাইলের আয়রন ডোম। মুখপাত্র বলেছেন, এ হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাতজন। তার মধ্যে তিন জনের অবস্থা সংকটজনক। ওদিকে ইসরাইলি মিডিয়া বলেছে, আহতরা ইসরাইলি সেনাসদস্য। এর জবাবে লেবাননের নাবাতিয়ের আদশিট শহরে বেশ কয়েক দফা আকাশপথে হামলা চালায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। এ সময় একটি তিন তলাবিশিষ্ট ভবনকে টার্গেট করা হয়। সেখানে অপারেশনে যুক্ত হয়েছে এম্বুলেন্স টিম। তারা ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন। এর নিচে অনেক মানুষ আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ হামলায় আল সোওয়ানা শহরে একটি বাড়িকে টার্গেট করা হয়। সেখানে সিরিয়ান একজন নারী রাওয়া মোহাম্মদ, তার দুই সৎ সন্তান হাসান মোহসেন (১৩) এবং আমির (২) নিহত হয়েছে। জেজিনে জালটা শহরের বাইরে, নাবাতিয়েতে জবা ও বাসালিয়া শহরে বিভিন্ন স্থানে টার্গেট করে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। উপকূলীয় শহর নাকুরায়ও হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান।
ইসরাইলের যুদ্ধ বিষয়ক কাউন্সিলের সদস্য বেনি গান্টজ বলেন, এই হামলার দায় শুধু হিজবুল্লাহর একার নয়। এ দায় লেবানন রাষ্ট্রেরও। ইসরাইলের উত্তরে হামলার জবাব হবে শক্তিশালী। মঙ্গলবার হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বার বার যুদ্ধকে বিস্তৃত করার হুমকি দিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আমরা এই যুদ্ধকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধারা মনে করে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে চিন্তা করা হবে ভুল। নাসরাল্লাহ বলেন, পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি মনিটরিং করছে হিজবুল্লাহ। দেখছে সব রকম সম্ভাব্য উপায়। যখন গাজায় আগ্রাসন বন্ধ হবে, তখন দক্ষিণের যুদ্ধও বন্ধ হবে।