সর্বশেষ
Home » অপরাধ » অন্যান্য অপরাধ » চট্টগ্রামের রাউজানে মসজিদ থেকে বের করে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

চট্টগ্রামের রাউজানে মসজিদ থেকে বের করে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

চট্টগ্রামের রাউজানে জুমার নামাজ পড়তে এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়ে মারা গেছেন মোহাম্মদ মুছা নামের এক প্রবাসী বিএনপি নেতা।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ঢেউয়া হাজীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ মুছা (৪৫) স্থানীয় মৃত কবির আহমদের পুত্র। দুই সন্তানের জনক মুছা ওমান ওয়াইলজা শাখা বিএনপির সহ সভাপতি ছিলেন।
মুসা রাউজান বিএনপির রাজনীতিতে গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় ছাড়ার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে চলে যান। এরপর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভয়ে তিনি আর এলাকায় আসেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মুছা অনেকটা গোপনে বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়িতে আসেন। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে দেখে ফেলেন। মুছা নামাজ পড়ে বের হতেই এক আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক তার ওপর হামলা করে এবং বেধড়ক পিটুনি দেয়। পিটুনি খেয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুছার ভাই তৌফিকুল বলেন, ‘আমার ভাই গিয়াস কাদেরের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। বিএনপি সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পরই তিনি ওমানে চলে যান।
এরমধ্যে কয়েকবার দেশে আসলেও এলাকায় আসেননি। হাটহাজারীর শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। এক মাস আগেই তিনি দেশে এসেছেন। আগামী ৫ তারিখ তার আবার ওমানে চলে যাওয়ার কথা ছিলো। ’কিন্তু এই নষ্ট রাজনীতি তাকে বাঁচতে দিলো না।’
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি আমার ভাইকে নিয়ে এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান ইকবালের সঙ্গে তার শহরের অফিসে দেখা করেছিলাম। তাকে আমার ভাই বলেছিলেন, তিনি আজকে বাবার কবর জিয়ারত করতে এলাকায় যাবেন। তাকে যেন তিনি প্রটেকশন দেন। তিনি আমার ভাইকে কথাও দিয়েছিলেন। আর এখন শুনলাম উনার নেতৃত্বে আজকে জুমার নামাজের পরই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে উনি (শাহজাহান ইকবাল) এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কি-না সেটা আমি নিশ্চিত নই।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন মানবজমিনকে বলেন, মুছা গিয়াস ভাইয়ের রাজনীতি করতেন। বিগত ১৭ বছর যাবৎ তিনি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কারণে এলাকাছাড়া। তিনি দেশে আসলেও এলাকায় যেতে পারতেন না।দীর্ঘদিন পর গতকাল বাড়িতে গিয়েছেন। আর গিয়েই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরতার শিকার হয়েছেন। আর এখন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
যদিও রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) জাহেদ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, মুছা নামের বিএনপির এই কর্মী মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিল আজকে। সেখানে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায় বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *