নিউইয়র্কের একজন বিচারক ডনাল্ড ট্রাম্পকে তার আসন্ন ফৌজদারি মামলার শুনানির সময়ে আইনজীবী, আদালতের স্টাফ এবং বিচারকদের সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে বিরত রাখার জন্য আদেশ জারি করেছেন। মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে ‘হুমকিপূর্ণ, অপমানজনক, অবমাননাকর’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ম্যানহাটনের জেলা অ্যাটর্নি অফিসের প্রসিকিউটররা একটি দুই পৃষ্ঠার চিঠিতে জানান যে, ট্রাম্প সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিচারকের মেয়েকে আক্রমণ করে গ্যাগ অর্ডার লঙ্ঘন করেছেন। নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জুয়ান মার্চানকে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আদালতের উচিত বিবাদীকে সতর্ক করা যে তার সাম্প্রতিক আচরণ বিদ্বেষমূলক এবং তাকে অবিলম্বে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া উচিত। যদি আসামি এই ধরনের আদেশ উপেক্ষা করতে থাকে, তাহলে তাকে বিচার বিভাগীয় আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে।’
ট্রাম্প বুধবার তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বিচারকের মেয়েকে আক্রমন করে কারাগারের পিছনে তার একটি ছবি ব্যবহার করার জন্য সমালোচনা করেছিলেন। ছবিটি দেখে তিনি বিচারকের মেয়ের উদ্দেশে লেখেন, আমার পক্ষে ন্যায্য বিচার পাওয়া অসম্ভব। আদালতের একজন মুখপাত্র এর প্রেক্ষিতে বলেন, এক্স অ্যাকাউন্টের হ্যান্ডেলটি বিচারকের মেয়ে লরেন মার্চানের ছিল, কিন্তু তিনি সেই অ্যাকাউন্টটি মুছে দিয়েছেন। অন্য কেউ এই হ্যান্ডেল থেকে ছবিটি ব্যবহার করেছে। তবে এই কাজ কে করেছে তা স্পষ্ট নয়। যদিও ট্রাম্পের সমর্থকরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট দাবিকে প্রমাণ করার জন্য দাবি করেছেন যে ওই এক্স হ্যান্ডেলটি এখনো বিচারকের মেয়ে পরিচালনা করে
ট্রাম্প এর আগেও বিচারকের মেয়েকে তার কাজের জায়গা থেকে অপসারণের চেষ্টা করেছিলেন। ১৫ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া বিচারের আগে ‘হুমকিপূর্ণ, প্রদাহজনক, অবমাননাকর’ বলে মনে করা মামলা সম্পর্কে বিবৃতি দেয়ার জন্য মার্চান প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে তিরস্কার করার পরে, ‘পর্নস্টারকে চুপচাপ অর্থ প্রদান মামলায়’ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্যাগ অর্ডারটি সামনে আসে ।
আদেশে বলা হয়েছে, ম্যানহাটনের জেলা অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ নিজে ছাড়া অন্য প্রসিকিউটর এবং আদালতের কর্মীদের বা জেলা অ্যাটর্নির সদস্যদের তদন্তে এবং বিচারে তাদের ভূমিকার বিষয়ে ট্রাম্প প্রকাশ্য বিবৃতি দিতে বা অন্যদের দেয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন না। আদেশটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে ট্রাম্পকে কোনও পরামর্শদাতা বা আদালতের স্টাফ সদস্যের পরিবারের লোকদের আক্রমণ করা থেকেও বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে বিচারক নিজেকে আদালতের কর্মচারি হিসাবে বিবেচনা করেছেন কিনা তা অনিশ্চিত ছিল। মার্চান উল্লেখ করেননি তিনি কীভাবে আদেশটি কার্যকর করবেন। সাধারণত, বিচারকরা শাস্তি হিসাবে বর্ধিত জরিমানা আরোপ করেন কিন্তু চরম পরিস্থিতিতে, শেষ পর্যন্ত কোনো আসামিকে বিচারের আগে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিতে পারেন যদি বিচারকের আদেশের অবমাননা করা হয়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান