আগামী ২রা জুন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে পর্দা উঠবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমবারের মতো অংশ নেবে ২০ দল। কন্ডিশনের মিল থাকায় এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা দেখছেন সাকিব আল হাসান।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সাকিব। ফেসবুকেও পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার ছবি পোস্ট করছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এরই ফাঁকে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন সাকিব।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেমন করতে পারে এমন প্রশ্নে সাকিব আশা করেন বিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারলে তারা ভালো করবেন। টাইগার অলরাউন্ডার বলেন, ‘বিশ্বকাপ পাওয়ার মতো অবস্থায় আসছি কি না, এটা বলাটা একটু মুশকিল। তবে টি-টোয়েন্টিতে যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে, বড় ছোট দল নেই। আমাদের বিশ্বাসটা দরকার, ওই বিশ্বাসটা নিয়ে যদি খেলতে পারি, আমরা ভালো করব। বলছি না, ট্রফি জিততে পারব কি পারব না।
তবে আমাদের ভালো কিছুর সম্ভাবনা আছে। আমরা যদি মোমেন্টাম পেয়ে যাই এটা ধরে রাখতে পারি। খুব বেশি কিন্তু ম্যাচ জিততে হয় না ভালো কিছু করতে।’
এবারের আসরে ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। সবমিলিয়ে টাইগারদের এটা কঠিন গ্রুপ। তবে গ্রুপ কঠিন হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন, দুই দেশের উইকেট বিবেচনায় বাংলাদেশ সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করেন সাকিব।
তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা কঠিন গ্রুপে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আসলে দলগুলোর পার্থক্য খুব কম হয়। যেকোনো দিন যেকোনো দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। অবশ্যই কঠিন প্রতিযোগিতা হবে। তবে আমার মনে হয় কন্ডিশন যেমন হবে সেটা আমাদের সহায়তা করবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের (খেলার) সঙ্গে বেশ মানানসই। একই ধরনের পিচ (বাংলাদেশের মতো) আমরা পেতে পারি। বিশেষ করে ডালাসে।’
বিশ্বের যে প্রান্তেই বাংলাদেশের খেলা হয়, সমর্থনের অভাব হয় না। সাকিবের আশা এই বিশ্বকাপেও প্রচুর সমর্থন পাবেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের হয়তো সহায়তা করবে। আমি জানি না নিউইয়র্কের পিচ কেমন হবে। আশা করছি প্রচুর সমর্থন পাব। ভালো করি, খারাপ করি আপনাদের অনেক সমর্থন পাব, এটাই আমার আশা। সমালোচনাও করতে পারেন, সমস্যা নেই। আমি মনে করি, আমরা আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের প্রতিদান দিতে পারব।’
এর আগে ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয় অস্ট্রেলিয়ার। সাকিবের নেতৃত্বে সেবার সেমিফাইনালে উঠতে না পারলেও প্রথমবার কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২টি জয় পায় টাইগাররা। নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে হারানো টাইগারদের জয়ের সুযোগ ছিল ভারতের বিপক্ষেও। কিন্তু লিটন দাসের ২৭ বলে ৬০ রানের অতিমানবীয় ইনিংসের পরও হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব আল হাসানের দল। তবে এবার আরও ভালো ফলাফল করা সম্ভব বলে মনে করছেন সাকিব।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের সেই সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল সাকিব আল হাসানের দল। ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১০৩ রান নিয়ে সিরিজ সেরা হন সাকিব। এবারও এখানে ভালো করতে চান বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। সাকিব বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতিটা আশা করি বেশ ভালো হবে। এর আগে যখন আমরা এখানে খেলেছি প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই সময় সিরিজ জিতেছিলাম। আশা করি এবারও ওরকম ভালো কিছু করতে পারব আমরা। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের পারফরম্যান্স অনেক ভালো ছিল। ওখান থেকে যদি আরেকটু উন্নতি করতে পারি আমার মনে হয় এবার আমাদের আরো ভালো করার সম্ভাবনা আছে।’
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৮ই জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। গত মাসে ঘরের মাঠে এই দলের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ ১০ই জুন। ১৩ই জুন নেদারল্যান্ডস ও ১৭ই জুন টাইগাররা নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে।