ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে গত ৫ই আগস্ট। তবে এই গণঅভ্যুত্থানে অগ্রভাগে ছিলেন সেনাবাহিনীর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তারাও। কিন্তু বিজয়ের একমাস কেটে গেলেও অবহেলিত বলে জানিয়েছেন তারা। অবশ্য এই বিজয় যাতে কোনো প্রতিবিপ্লবের কারণে বিনষ্ট না হয় সেদিকেও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। প্রয়োজনে তাদের কাজে লাগানোর আহ্বানও জানানো হয়। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কমপ্লেক্সে রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরাম (আরআরএসএফ) আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিপ্লবে শাহাদাতবরণকারী সকল শহীদ ও ছাত্র জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে লে. কর্নেল (অব.) মোশাারফ জানান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অগ্রভাগে ছিল।
তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গণঅভ্যুত্থানে দুইভাবে ভূমিকা রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি মাঠে নেমেছেন এবং চাকরিরতরা চূড়ান্ত সময়ে অবদান রেখেছেন। আবু সাইদ হত্যার পর সেনাবাহিনীর সব স্তরের সদস্যরা মাঠে নামেন। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা প্রতিবাদ ও জনসংযোগ শুরু করেন। ১৮ জুলাই মিরপুর ডিওএইচএস থেকে প্রতিবাদের সূচনা হয়। এটাই সর্বপ্রথম সশরীরে আন্দোলন।
তিনি বলেন, সরকার পতনের এক মাস পার হলেও এখনও আমাদের বিষয়ে জানার আগ্রহ কারো নেই। আমাদের দাবি আদায়ে কোর্টে যাওয়ার অধিকারও নেই। অন্যান্য সেক্টরের মতো মেধাহীন পদোন্নতির মাধ্যমে এই সেক্টরকেও ধ্বংস করা হয়েছে। এ নিয়ে আগে থেকেই সশস্ত্র বাহিনীতে ক্ষোভ ছিল।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিমুল গনি (অব.) বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত দেশ গড়তে দেশপ্রেমিক, নিবেদিত মানুষ এবং সঠিক তদারকি প্রয়োজন। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি বেসরকারি অফিসার, প্রবাসী এবং বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে সংস্কার কাজ করা সম্ভব। সশস্ত্র বাহিনীতে বিভিন্ন খাতে দক্ষ অবসরপ্রাপ্ত ৪ হাজার জনবল আছে।
অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকার সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় মেধাহীন নিয়োগ দিয়ে নৈরাজ্য তৈরি করেছে। অনেক সংকট ও ৪০ লাখ মামলা রেখে গেছে। এখনো প্রতিবিপ্লবের জন্য টাকা ছড়ানো হচ্ছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর ড. শহীদুজ্জামান, ডা. জাহেদ উর রহমান। সভা পরিচালনা করেন লে. কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান।