গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে নারী এবং শিশুসহ অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ নিয়ে ৪৯ জনকে হত্যা করলো ইসরাইল। এছাড়া এই হামলায় প্রায় একশ মানুষ আহত হয়েছেন। এখনও ইসরাইল অঞ্চলটিতে তাদের স্থল হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, শনিবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জাবালিয়ার বাসিন্দাদের উপত্যকার দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর আগের সপ্তাহতেও জাবালিয়াতে প্রাণঘাতী হামলা করেছিল ইসরাইল। তাদের দাবি তারা সেখানে ফিলিস্তিনের যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসকে নির্মুল করতে এসব হামলা করছে। তবে ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান এসব হামলায় ফিলিস্তিনের বেসামরিক বাসিন্দারাই প্রাণ হারাচ্ছেন।
শনিবার ইসরাইলি বাহিনীর নিন্দা জানিয়ে হামাস বলেছে, তেল আবিবের বাহিনীর এসব হত্যাকাণ্ড ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর গণহত্যার ধারাবাহিকতা। এসব গণহত্যার পেছনে আমেরিকানদের মদদ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে হামাস। গত কয়েক দিনে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের হামলায় আহত হয়েছেন ৯০ জনের বেশি আশ্রয়প্রার্থী। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, সরে যাওয়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করায় শরণার্থীদের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে যে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান শুক্রবার রাতে জাবালিয়ায় একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে বোমাবর্ষণ করেছে, এতে চারটি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২২ জন। এছাড়া এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এখনও ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে, তারা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তিনি যোগ করেছেন যে, অনেক হতাহত ব্যক্তি ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় বা রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন। যদিও গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালটি প্রায় অচল বলা চলে। সেখানে প্রায় সময়ই বিদ্যুত সংযোগ থাকে না। এছাড়া হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্বালানি না থাকায় বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এমন করুণ পরিস্থিতির মধ্যে কামাল আদওয়ানি হাসপাতল থেকে চিকিৎসকদেরও বের করে দিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই হামাস-ইসরাইল সংঘাতের এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। এসময়ের মধ্যে অন্তত ৪২ হাজার ১৭৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এছাড়া তেল আবিবের হামলায় আহত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৩৩৬ জন। হতাহতের মধ্যে বেশির ভাগই নারী এবং শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।